নবজাতক শিশুর যত্নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর একটি হলো সঠিক বেবি ডায়াপার নির্বাচন। এই এক টুকরো উপকরণই শিশুকে আরাম দেয়, ত্বককে সুরক্ষিত রাখে এবং মা-বাবার জীবন অনেক সহজ করে তোলে। কিন্তু বাজারে এত ধরনের ব্র্যান্ড ও ভ্যারিয়েশন থাকায় অনেক সময় নতুন মা-বাবা দ্বিধায় পড়ে যান—কোনটি সেরা, কোনটি নিরাপদ?
এই ব্লগে সহজ ও বাস্তবভিত্তিক কয়েকটি পদ্ধতির মাধ্যমে read more নবজাতকের জন্য সঠিক বেবি ডায়াপার বাছাইয়ের উপায় তুলে ধরা হলো।
শিশুর ওজন ও বয়স অনুযায়ী সাইজ নির্ধারণ করুন
নবজাতকের ডায়াপার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সাইজ। একটি ছোট বা বড় সাইজের ডায়াপার শিশুকে অস্বস্তি দিতে পারে এবং লিকেজ হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
সাধারণত নবজাতকের ওজন ২.৫–৪.৫ কেজি হলে New child (NB) সাইজ উপযোগী হয়। অনেক ব্র্যান্ড আবার প্রিম্যাচিওর শিশুদের জন্যও Excess Tiny (XS) সাইজ দেয়।
উপাদান (Elements) যাচাই করুন – কোমলতা ও নিরাপত্তা
একটি বেবি ডায়াপার সরাসরি শিশুর সংবেদনশীল ত্বকের সাথে যুক্ত থাকে। তাই এটি কিসে তৈরি—সেটা জানা জরুরি।
ভালো মানের ডায়াপার সাধারণত নিম্নলিখিত উপাদানে তৈরি হয়:
Cottony Soft Layer: কোমল ও শ্বাসপ্রশ্বাসযোগ্য Chlorine Free Pulp: ত্বকের জন্য ক্ষতিকর নয় No Latex, Fragrance, or Paraben: অ্যালার্জির ঝুঁকি কমায়
তাছাড়া, যারা অর্গানিক বা প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি ডায়াপার ব্যবহার করতে চান, তারা Bamboo Fiber বা Plant-Based Diaper বেছে নিতে পারেন।
শোষণক্ষমতা – ডায়াপার কতক্ষণ শুকনা রাখে?
নবজাতকরা দিনে গড়ে ৮–১২ বার মূত্রত্যাগ করে। তাই একটি বেবি ডায়াপার বেছে নেওয়ার সময় অবশ্যই তার শোষণক্ষমতা যাচাই করতে হবে।
Super Absorbent Core Leak Guard Technologies Dry Layer Floor
এগুলো শিশুর ত্বককে দীর্ঘক্ষণ শুকনা রাখতে সাহায্য করে, ফলে র্যাশ বা চর্মরোগের আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়।
ডায়াপারের টাইপ – প্যান্ট না বেল্ট?
নবজাতকের জন্য সাধারণত বেল্ট টাইপ ডায়াপার বেশি উপযোগী। কারণ প্যান্ট টাইপ ডায়াপার পরাতে গেলে শিশুকে দাঁড় করানো বা বসানোর প্রয়োজন হয়, যা নবজাতকের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
সহজে খোলা ও পরানো যায়
নরম ওয়েস্ট ব্যান্ড থাকে, তাই শিশুর পেটে চাপ পড়ে না
ছোট বয়সে দ্রুত বদলানো যায়
তবে ৬ মাসের পর যখন শিশু একটু নড়াচড়া শেখে, তখন প্যান্ট টাইপে যাওয়া যায়।
সাশ্রয়ী না কি প্রিমিয়াম? ব্যালান্স খুঁজুন
সবচেয়ে দামি ডায়াপার মানেই যে সব সময় সবচেয়ে ভালো—তা নয়। আবার খুব সস্তা পণ্যও অনেক সময় মানের দিক থেকে ভালো না হতে পারে।
সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হলে নিচের বিষয়গুলো বিবেচনায় নিন:
একটি ডায়াপার কত ঘন্টা পর্যন্ত কার্যকর?
ব্যবহারের পর শিশুর ত্বকে লালচে দাগ বা র্যাশ হচ্ছে কি না?
প্রতিটি ডায়াপার কত টাকায় পড়ছে (পার পিস কস্ট)?
দেশীয় অনেক ব্র্যান্ড এখন মানসম্পন্ন পণ্য দিচ্ছে কম দামে। একাধিক ব্র্যান্ড ট্রায়াল দিয়ে দেখে নিতে পারেন।
ব্যবহারকারীর রিভিউ ও ডাক্তারের পরামর্শ নিন
ইন্টারনেটে বর্তমানে প্রচুর রিভিউ পাওয়া যায়—বিশেষ করে মা-বাবাদের ফোরাম, ফেসবুক গ্রুপ বা প্যারেন্টিং ব্লগে। ডায়াপার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা, কোন ব্র্যান্ডে কী সমস্যা দেখা দেয়, কোনটা বেশি টিকসই—এসব পড়লে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়।
তাছাড়া শিশুর ত্বক যদি অতি সংবেদনশীল হয়, তবে শিশুর শিশু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট হাইপোঅ্যালার্জেনিক ডায়াপার ব্যবহার করাই নিরাপদ।
বেছে নিন সচেতনভাবে, শিশুর আরাম আগে
নবজাতকের যত্নে একটি ছোট ভুল বড় সমস্যার কারণ হতে পারে। তাই বেবি ডায়াপার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় জানা ও অনুসরণ করলেই আপনার শিশু আরামদায়ক, স্বাস্থ্যকর এবং নিরাপদ থাকতে পারে।
একটি ভালো ডায়াপার শুধু পরিষ্কার রাখে না, বরং শিশুর ঘুম, হাসি ও সার্বিক সুখের অংশ হয়ে ওঠে।